কেন্দ্রের নয়া নির্দেশনা
কেন্দ্রের নয়া নির্দেশনা: সম্প্রতি পহেলগাঁও কাণ্ডের পর প্রশাসন ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে বেশ কড়া মনোভাব প্রকাশ করেছেন। কারণ কাশ্মীরে এই জঙ্গি হামলার পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, নাগরিকত্ব। কারণ অনেকেই দেশের সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করছেন এবং সেই সঙ্গে হামলার ছক বানাচ্ছে। তাই সরকারের তরফে থেকে সীমান্তে অনুপ্রবেশ রুখতে ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে নতুন মাপকাঠি বেঁধে দিলেন। এবার থেকে আধার, প্যান ও রেশন কার্ড দেখালেও আর ভারতের নাগরিক গণ্য হবেন না।
নাগরিকত্বের প্রমাণ দেবে কোন নথি?
রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশ থেকে প্রচুর মানুষ দিল্লিতে এসে ভিড় বাড়াচ্ছে বলে। এমনকি তারা জাল নথি দিয়ে ভুয়ো আধার কার্ড, রেশন কার্ড বানিয়ে ভারতের নাগরিক হিসেবেই সেখানে তাঁরা বসবাস করছেন। তাই সেই আবহেই দিল্লি পুলিশের তরফে নাগরিকত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে নয়া মাপকাঠি বেঁধে দেওয়া হল। জানা গিয়েছে এখন থেকে মূলত দু’টি নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ধরা হবে। যার মধ্যে একটি হল ভোটার আইডি কার্ড এবং অপরটি হল পাসপোর্ট।
আধার, প্যান ও রেশন কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয় কেনো?
ভারতে নাগরিকদের একাধিক পরিচয়পত্র রয়েছে, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড। আধার যদিও পরিচয়পত্র, কিন্তু তা নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয়। প্যানকার্ড কর সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত হয়, রেশন কার্ড ব্যবহৃত হয় জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে। এর কোনওটিই নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র নয়। কেন্দ্র জন্মের শংসাপত্র এবং ডমিসাইল শংসাপত্র, স্থায়ী নিবাসের শংসাপত্রই নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ধরে। তবে এবার দিল্লি পুলিশ নাগরিকত্ব প্রমাণ করার ক্ষেত্রে এই দুই তথ্যকেই তুলে ধরেছে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্ত কেন ?
দিল্লি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, “ বিগত বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে বেআইনিভাবে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে আধার, প্যান এবং রেশন কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। যারা নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই রয়েছে- রোহিঙ্গা বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি থেকে আসা। যার ফলে নানা বেআইনি কাজ চলছে দেশ জুড়ে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

সরকারের সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয়েছে?
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মোদি সরকারের এই নয়া নির্দেশিকার পর সব জেলার ডিসিপিদের তাঁদের এলাকায় ‘সন্দেহজনক’ ব্যক্তিদের উপর নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এই নির্দেশের পর পরই, দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত বেআইনিভাবে বসবাসকারী প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন পাকিস্তানি নাগরিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৫২০ জন মুসলিম। এবং তাঁদের মধ্যে থেকে আবার ৪০০ জন আটারি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

বিগত প্রায় ২ বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।