জন্ম শংসাপত্র : টিভি ও নিউজ পেপার খুলেই দেখা যায় জাল আধার কার্ড চক্রের কথা শুনা যায়। এই ঘটনা দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার বগুলা। পাহাড়ের মতো চেপে বসছে জাল আধার কার্ড চক্র। তার উপর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পড়শি বাংলাদেশ। আধার কর্তৃপক্ষ এই চক্রকে নির্মূল করতে এবার এক কঠোর পদক্ষেপ নিলেন। ইউআইডিএআই ও পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যদপ্তরের যৌথ সিদ্ধান্ত, আধারের তৈরিতে এখন করাতে হবে জন্মের শংসাপত্রের অনলাইন ভেরিফিকেশন। সম্প্রতি এই বিষয়ে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের আধার আধিকারিকরা স্বাস্থ্যদপ্তরের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।স্বাস্থ্যদপ্তরের এক পদস্থকর্তা জানিয়েছেন দুই – এক সপ্তাহের মধ্যেই এই কর্মসূচি শুরু হয়ে যাবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে রাজ্য ও আধার কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমও।
অনলাইন জন্ম শংসাপত্র থেকে আধার কার্ড তৈরির পরিকল্পনা:
রাজ্য সরকার ২০২২ সাল থেকে অনলাইন জন্ম শংসাপত্র চালু করেছে। ‘জন্ম মৃত্যু তথ্য’ নামক পোর্টাল থেকে দেওয়া হচ্ছে জন্ম-মৃত্যুর যাবতীয় শংসাপত্র। প্রতিটি শংসাপত্রই রয়েছে কিউআর কোড। সিদ্ধান্ত হয়েছে, এরপর থেকে ১৮ বছরের নীচে কারও আধার কার্ড তৈরি করতে গেলেই শংসাপত্রের কিউআর কোড স্ক্যান করে দেখে নেওয়া হবে, সেটি আসল কি না নকল। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের পোর্টাল থেকে শংসাপত্র ইস্যু হলে তবেই আধার কর্তৃপক্ষ কার্ড তৈরির দিকে এগবে। ন হলে আবেদনকারীকে ফিরে আসতে হবে।
সূত্রের খবর, ১৮ বছরের নীচে আধার কার্ড করার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে জন্ম শংসাপত্র জমা দিতে হয়। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে হলে জমা দিতে হয় সচিত্র ভোটার কার্ড বা স্বীকৃত সরকারি পরিচয়পত্র। সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র আধার কার্ড তৈরি করবে বলেই জাল জন্ম শংসাপত্রের চক্র ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে দেশের নানা প্রান্তে। রাজ্যে রাজ্যে পুলিসি হানার পরও নির্মল করতে পারেনি প্রতারণার বিরাট এই চক্রকে। আধার কর্তৃপক্ষ এরপরই পুরো ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছতা আনতে দেশজুড়ে এমন পরিকল্পনা নেন। সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বছরখানেক আগে আমরা এই পরিকল্পনায় হাত দিয়েছিলাম। সেটিও আরও নিখুঁতভাবে গুছিয়ে বাস্তবায়িত করাই এখন আমাদের লক্ষ্য।’

নতুন পদক্ষেপের সুবিধা:
ইতিমধ্যেই জন্ম মৃত্যু তথ্য’ পোর্টালের জন্য দালাল চক্রের মৌরসিপট্টায় ঢিল পড়েছে। মানুষের জন্য নথি হাতে পাওয়াটাও এখন অনেক সহজ। এখন কিউআর কোড স্ক্যান করে যদি দেখা যায়, ওই জন্ম শংসাপত্র পোর্টালে রয়েছে, তাহলে সেটি জাল হওয়ারও কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। দপ্তর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত নতুন পোর্টাল থেকে ৪৮ লক্ষ জন্ম শংসাপত্র ইস্যু হয়েছে। এরপর এইসব শংসাপত্রের কিউআর কোড স্ক্যান করে, সত্যাসত্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই ইস্যু করা হবে আধার কার্ড।
আরও পড়ুন, ১২ লক্ষ OBC সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছে! চাপের মুখে রাজ্য, হাইকোর্টের বড় নির্দেশ

বিগত প্রায় ২ বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।