জব কার্ডের পেমেন্ট
জব কার্ডের পেমেন্ট: যাদের জব কার্ড রয়েছে তাদের জন্য সুখবর। আদালতের নির্দেশ ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা চলবে না, তা অবিলম্বে মেটাতে হবে। চার বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের বকেয়া টাকা কেন্দ্র না দেওয়া এবার কলকাতা হাই কোর্ট সরব হলেন।
ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য:
মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি চৈতালী চট্টোপ্যাধ্যায় দাসের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে —এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মানুষের অধিকার খর্ব করা যাবে না। আদালত নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় সরকারকে যাতে অবিলম্বে টাকা দেওয়া প্রক্রিয়া শুরু করেন।
আদালতের মতামত:
আদালতের মতে, দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তার যেনো নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক। এই নিয়ে যাতে কেন্দ্রীয় সংস্থা পদক্ষেপ নেন। কিন্তু সেই অজুহাতে প্রকল্পের প্রকৃত উপভোক্তাদের সুবিধা আটকে রাখা সংবিধান বিরুদ্ধ। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারকেও তাদের অংশের আর্থিক অবদান নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টে কোন কোন মামলা হয়েছে?
হাইকোর্টে এই মামলায় দুটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা দাখিল হয়েছিল। একটি দায়ের করে পশ্চিমবঙ্গ খেত মজদুর সমিতি এবং অপরটি করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একদিকে যেখানে বকেয়া অর্থ না মেটানোর প্রতিবাদ তোলা হয়েছে। অন্যদিকে প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়।
দুর্নীতি হয়েছে কত টাকা?
হাইকোর্ট এই দুর্নীতির তদন্তে একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন এক জন নোডাল অফিসার। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদা এবং দার্জিলিং জেলায় মোট ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা অনিয়মের মাধ্যমে বরাদ্দ করা হয়েছিল, যা পরে উদ্ধারে সক্ষম হয় তদন্ত কমিটি। কেন্দ্রের দাবি, দুর্নীতির পরিমাণ আরও বেশি—মোট ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা, যার একটি বড় অংশ এখনও ফেরত আসেনি।
আদালতের তরফ থেকে প্রশ্ন?
এহেন অবস্থায়, আদালত প্রশ্ন তোলে—দুর্নীতি যেখানে প্রমাণিত, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? এবং যাঁরা প্রকৃত উপভোক্তা, তাঁদের কেন এখনও টাকা দেওয়া হচ্ছে না? এ নিয়ে আদালত কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
দুটি পক্ষের মন্তব্য?
শুনানিতে রাজ্যের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী ও সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন কেন্দ্রের ‘অহংকারী মনোভাব’ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তোলেন। এছাড়াও তিনি জানান, তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্র কোনও প্রস্তাব গ্রহণ করছে না এবং রাজ্যের একাধিক প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
এই মন্তব্যটি পাল্টা বক্তব্যে মামলাকারী সংস্থার পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এই কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছেন সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ।”

মামলার পরবর্তী শুনানি কবে?
আদালত মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করেছেন ১৫ মে। তার আগেই কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য-সহ ব্যাখ্যা দিতে হবে—কেন প্রকৃত প্রাপকদের ন্যায্য টাকা এখনও আটকে আছে?
আরও পড়ুন, Ration card: রেশন কার্ড নিয়ে নতুন নির্দেশিকা সরকারের, বিস্তারিত জানুন।

বিগত প্রায় ২ বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।