টাঙ্গনে বাড়ছে জল, বেহাল বাঁধ! ফিরছে 2017 সালের বন্যার আতঙ্ক!
ফিরছে 2017 সালের বন্যার আতঙ্ক!
একঘেঁয়েমি গরম পার করে অবশেষে রাজ্য প্রবেশ করলো বৃষ্টির আবহাওয়া। তবে এর আগেই এক দফা ঘূর্ণিঝড় বঙ্গ কাঁপিয়ে দিয়ে গিয়েছে যা সকলের কাছে ২০২৪- এর রিমেল নামে পরিচিত। কিন্তু তার পরেও গরম কম ছিলো না রাজ্য জুড়ে। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে তাপমাত্রা একটু স্বাভাবিক বা তার চেয়ে কম ছিলো কিন্তু উত্তরবঙ্গের সমতল ভূমিতে আবার সেই ভ্যাপসা গরম। কিন্তু সব পার করে অবশেষে ঝড় বৃষ্টি শুরু হচ্ছে বঙ্গ জুড়ে। এ বিষয়ে কি জানাচ্ছেন আলিপুর দুয়ার আবহাওয়া দপ্তর, আসুন জেনে নেওয়া যাক।
Table of Contents
২০১৭ সালের বন্যা কি ফেরত আসছে?
বর্ষাকাল পড়তে না পড়তেই ঘন ঘন ঝড় বৃষ্টি তার সাথে বজ্রপাত ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। ঘন কালো মেঘে আকাশ সারাক্ষণ অন্ধকারে ঘিরে রয়েছে। এরই মধ্যে আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এই বছরও ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই নিয়ে আতঙ্কিত রাজ্যের এলাকাবাসীরা।
উত্তরবঙ্গের টাঙ্গন নদীর জল বাড়ছে, যার কারনে আতঙ্কিত সেখানকার আশেপাশের বাসিন্দারা। তারা ভয়ে রয়েছেন ২০১৭ সালের মতো আবার বন্যা আসবে ২০২৪- এ। ২০১৭ সালে টাঙ্গন নদীর বাঁধ ভাঙায় উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ শহর এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে জল ঢুকে বন্যার সৃষ্টি করেছিলো। এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছিলো সেই সব মানুষদের। নদীর তীরে অবস্থিত মানুষদের বাড়ি – ঘর হারাতে হয়েছিলো ও ফসলের ও অনেক ক্ষতি হয়েছিলো। সরকার থেকে ত্রাণ ও ফসলের ক্ষতিপূরণ দিলেও সবটা নতুন করে তৈরি করতে অনেকটাই সমস্যার সম্মুখীন করতে হয়েছিলো সেই সব বাসিন্দাদের। এছাড়াও শুধু ঘর – বাড়ি ও ফসল না বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সেই সব বাঁধ গুলি নির্মাণ করতে অনেকটা সময় লেগেছিলো। ফিরছে 2017 সালের বন্যার আতঙ্ক।
আবারও যদি ঘটনার পুনরাবর্তন হয় এবার তারা কি করবে? কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিবে? কিভাবে জীবন যাপন করবেন এই বিষয় নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। তবে বৃষ্টি বাড়লেও ২০১৭ সালের মতো বন্যা হবে কি না সেই বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট খবর দেয় নি আলিপুরদুয়ার আবহাওয়া দপ্তর।
এই বিষয় নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কি বক্তব্য?
২০২৪- এর ঝড় বৃষ্টি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বার্তা সামনে আসতেই সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য “বৃষ্টি হওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু নদীর পাড় ভেঙ্গে বন্যা প্রবেশ করা এটা সরকারের গাফিলতির কারণ।” তারা আরও জানান, টাঙ্গন নদীর পাশ থেকে মাফিয়ারা বালি তুলেই চলেছে, যার কারনে ভারী বৃষ্টিতে নদীর বাঁধ ভাঙ্গার সক্ষমতা অনেকটাই বেশি। এবং নদীর বাঁধ ভেঙ্গে নীচু এলাকায় জল ঢোকার সম্ভবনা অনেকটাই বেশি। আর এই মাটির খনন আটকানোতে কোনো রকম ভ্রুক্ষেপ নেই সরকারের এমনটাই জানিয়েছেন সেখানখার স্থানীয় বাসিন্দারা। ফিরছে 2017 সালের বন্যার আতঙ্ক। ফিরছে 2017 সালের বন্যার আতঙ্ক।
আর এই সব কারনে টাঙ্গন নদীর এলাকাবর্তী মানুষজন চিন্তায় রয়েছে এই বারও যদি মুষুলধারায় বৃষ্টি হয় তো টাঙ্গন নদীতে আবার জল বাড়বে। আর টাঙ্গন নদী ভারত ও বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত একটি নদী। টাঙ্গন নদী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। টাঙ্গন নদী একটি পুনর্ভবা নদীর উপনদী, যেখানে প্রায় সারাবছরই জল থাকে। এটাও এলাকাবাসীর ভয়ের অন্যতম কারণ।
আবহাওয়ার সতর্ক বার্তা:
আলিপুরদুয়ার আবহাওয়া দপ্তর সবসময় আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানাচ্ছে। সেই অনুযায়ী এই বছর বৃষ্টি স্বাভাবিক ভাবেই চলবে যার কারনে টাঙ্গন নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষদের ভয় পাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। ইতিমধ্যে ঝড় বৃষ্টি ঠিক মতো শুরু হতে না হতেই কৃষকদের জন্য ফসল উঠিয়ে নেওয়ার সতর্কতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং মৎস্যজীবীদের জন্য সমুদ্রে না যাওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।দক্ষিণবঙ্গে ঝড় বৃষ্টির প্রভাব স্বাভাবিক থাকেলও উত্তরবঙ্গে অনেকটাই বেশি ঝড় বৃষ্টি চলবে এমনটা জানালো হাওয়া অফিস। ঘন ঘন বজ্র বিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গ জুড়ে। ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি এলাকায় নামতে পারে ধ্বস। সেই দিকেও সর্তক থাকতে বলেছেন আবহাওয়া দপ্তর। ফিরছে 2017 সালের বন্যার আতঙ্ক।
Regional Meteorological Centre- Click Here
আরও পড়ুন- Anganwadi Recruitment 2024 উচ্চমাধ্যমিক পাশে রাজ্যে ১৩ হাজার Anganwadi কর্মী নিয়োগ!
বিগত প্রায় দুই বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।