Tourist Places in Raiganj: উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের কিছু দর্শনীয় স্থান।
Tourist Places in Raiganj:
রায়গঞ্জ: ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলার একটি শহর ও পৌরসভা এলাকা। এটি উত্তর দিনাজপুর জেলার সদর দপ্তর। এই শহরটি গড়ে ওঠে কুলিক নদীর তীরে। ২০০ বছর বয়সী এই শহরটির নাম রায়গঞ্জ।
উত্তর দিনাজপুর জেলার একটি ২০০ বছর প্রাচীন শহর রায়গঞ্জ। যা ৩৭ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে অবস্থিত রয়েছে। এই শহরে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান ও ঘোরার জায়গা। আজ সেই জায়গাগুলো সমন্ধে আমরা অবগত হবো। রায়গঞ্জের কিছু ভ্রমণ কেন্দ্রিক জায়গাগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।
উল্লেখিত রায়গঞ্জের দর্শনীয় স্থানগুলো হলো:
Table of Contents
১. রায়গঞ্জ কুলীক পক্ষিনিবাস:
রায়গঞ্জ কুলীক পক্ষিনিবাস এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখিরালয় হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। এছাড়াও এটি শুধু বিখ্যাত পাখিরালয় নয় এখানে রয়েছে ছোটো বন দপ্তর বিভাগ। যেখানে দেখার মতো ছোটো ছোটো বন্য প্রাণী থেকে শুরু করে চারিপাশের সবুজ ও সতেজ গাছপালা ভির জমিয়ে রেখেছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক পর্যটকদের ভিড় জমে এখানে। বিশেষত শীতের ঋতুতে এই পাখিরালয়ের শোভা আরও বৃদ্ধি পায়। কারণ শীতের ঋতুতে এই বন অরণ্যে পর্যটকদের জন্য রয়েছে চড়ুইভাতির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং তার সাথে এদের তরফ থেকে রয়েছে যাত্রীদের থাকা খাওয়ার জন্য কিছু সুবিধা। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় নিজেদের দেশের নানান জায়গা থেকে অনেক রকমের পরিযায়ী পাখিদের সমাগম ঘটে এখানে, যেই বিষয়টি রায়গঞ্জ কুলীক পক্ষিনিবাস এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখিরালয় হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

এছাড়াও এটি শুধু বিখ্যাত পাখিরালয় নয় এখানে রয়েছে ছোটো বন দপ্তর বিভাগ। যেখানে দেখার মতো ছোটো ছোটো বন্য প্রাণী থেকে শুরু করে চারিপাশের সবুজ ও সতেজ গাছপালা ভির জমিয়ে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক পর্যটকদের ভিড় জমে এখানে। বিশেষত শীতের ঋতুতে এই পাখিরালয়ের শোভা আরও বৃদ্ধি পায়। কারণ শীতের ঋতুতে এই বন অরণ্যে পর্যটকদের জন্য রয়েছে চড়ুইভাতির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং তার সাথে এদের তরফ থেকে রয়েছে যাত্রীদের থাকা খাওয়ার জন্য কিছু সুবিধা। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় নিজেদের দেশের নানান জায়গা থেকে অনেক রকমের পরিযায়ী পাখিদের সমাগম ঘটে এখানে, যেই বিষয়টি দেশের নানান জায়গা থেকে অনেক রকমের পরিযায়ী পাখিদের সমাগম ঘটে। যেই বিষয়টি এই কুলীক পক্ষিনিবাসে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের মন হরণ করতে বাধ্য করেছে। পাখিদের মধ্যে যেগুলি সবসময় দেখা যায় মাছরাঙ্গা, চিল, বাজ, বক, সারস, পেঁচা, কাঠঠোকরা ইত্যাদি। এছাড়াও যেসব পরিযায়ী পাখিদের ভিড় এখানে পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয় সেগুলো মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরিযায়ী পাখি হলো – ডংগো, হেরন, এগ্রেট, ফ্লাইক্যাচার, স্টর্ক প্রভৃতি।
রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাস – Click Here
২. রায়গঞ্জের গির্জাঘর তথা সেন্ট জোসেফ দ্য ওয়ার্কার ক্যাথেড্রাল:
রায়গঞ্জের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি অন্যতম আকর্ষণ হলো রায়গঞ্জের গির্জাঘর তথা সেন্ট জোসেফ দ্য ওয়ার্কার ক্যাথেড্রাল। গির্জা ঘরটি তৈরী করা হয়েছে খোদাই করা দরজা ও গির্জার ওপরে ষড়ভুজাকৃতির গম্বুজা ধরনের উচ্চ বেদি রয়েছেন এবং গির্জাটি ছাদ ও কাঁচের চিত্র ও গির্জার দুই পাশে বড়ো দুটি বিশিষ্ট স্তম্ভ রয়েছে। এটি উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের কর্ণজোড়ার মিশন মোড়ে অবস্থিত। রোজ তেমন ভিড় না জলমেও বিশেষ দিন যেমন যীশু খ্রীষ্টের জন্ম তিথি ২৫ শে ডিসেম্বর বড়দিনে ব্যপক ভিড় জমে রায়গঞ্জ শহরের বিখ্যাত এই সেন্ট জোসেফ দ্য ওয়ার্কার ক্যাথেড্রালে। বহু দূর দূর থেকে দর্শনার্থীরা এখানে ঐ দিন উপস্থিত হয় শুধুমাত্র যীশু খ্রীষ্টের জন্ম তিথি উপলক্ষ্যে আয়োজিত হওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য। কারণ সেদিন সেখানে আয়োজন করা হয় বিশেষ বড়ো এক মেলার যেখানে রায়গঞ্জের প্রায় সব মানুষ পরিদর্শনে আসে। Tourist Places in Raiganj

আরও পড়ুন- Raiganj Kulik Bird & Wildlife Sanctuary: এশিয়া জুড়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি অভয়ারণ্য!
৩. রায়গঞ্জ মিউনিসিপ্যাল পার্ক:
রায়গঞ্জ কুলীক পক্ষিনিবাস ও সেন্ট জোসেফ দ্য ওয়ার্কার ক্যাথেড্রালের মতো আর একটি ভ্রমণের জায়গা হলো রায়গঞ্জ মিউনিসিপ্যাল পার্ক। যেখানে বাচ্চা থেকে বড়ো সকলের বিনোদনের জন্য রয়েছে অনেক ধরনের পার্কে আনন্দ উপভোগ করার মতো সামগ্রী। ছোটো থেকে বড়ো সকলের প্রিয় দোলনা থেকে শুরু করে নানান ধরনের আনন্দ উপভোগ করার সামগ্রী। এছাড়াও রয়েছে শীতের দিনের পিকনিক স্পট ও পার্কের ভেতরে ক্যান্টিনের ব্যবস্থা যেখানে স্ন্যাকস থেকে শুরু করে চা, কফি ও আরও অন্যান্য খাবার পাওয়া যায়। আরও রয়েছে যে কোনো অনুষ্ঠান করার জন্য ভবনের ব্যবস্থা বা বাইরে থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা। এই রায়গঞ্জ মিউনিসিপ্যাল পার্কটি রায়গঞ্জের এবং তার পার্শ্ববর্তী জায়গাগুলোতেও বিশেষ জনপ্রিয় রয়েছে।

৪. রায়গঞ্জ বাহিন রাজবাড়ি:
উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের কিছু উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় ও ভ্রমণের স্থানগুলোর মধ্যে আর একটি হলো বাহীন রাজবাড়ি। এমন অনেক ছোটো বড়ো রাজবাড়ি রায়গঞ্জের বুকে অবস্থিত রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে বাহিন রাজবাড়ি অন্যতম। এই রাজবাড়ি ৪০০ বছর পুরোনো হওয়ায় বর্তমানে রাজবাড়ি তার শোভা হারিয়ে জরাজীর্ণ পরিস্থিতি ছাড়া কিছু অবশিষ্ট নেই। তবু রায়গঞ্জ প্রশাসন থেকে এই বাহিন রাজবাড়ির যত্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাহিন রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জমিদার ঈশ্বরচন্দ্র রায়চৌধুরী। বিহার সংলগ্ন নাগর নদীর পাশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিলো এই রাজবাড়ি যার অবস্থান স্বরুপ বলা যায় রায়গঞ্জ শহর থেকে ১৪ কিমি ভেতরে রাধিকাপুর ও কাঠিহার রেললাইনের পাশেই অবস্থিত বাহিন গ্রাম যেখানে তৈরি করা হয়েছে এই রাজবাড়ি। জমিদার ঈশ্বরচন্দ্র রায়চৌধুরীর এই রাজবাড়িতে একটি মন্দির ছিলো যা এখনো রয়েছে সেখানে। সেই মন্দিরে বড়ো ধুমধাম করে মা সিংহবাহিনীর পূজা করা হতো, যা এখন ধীরে ধীরে বারোয়ারি পুজোয় রূপান্তরিত হয়েছে। এখানকার পুরোনো ঐতিহ্য এখনো অনেকের মন কাড়ে তাই রায়গঞ্জের বাইরে থেকে অনেক পর্যটকরা এই রাজবাড়ি পরিদর্শনে আসে। শীতের সময় এই বাহিন রাজবাড়িতে বাইরের লোকেদের সমাগম বাড়ে কারণ শীতের বিকেলে নদীর পাড়ে বসে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে পুরোনো ঐতিহাসিক গল্প শোনা ও ছোটো করে একটু খাওয়া দাওয়ার আয়োজন সবাই পছন্দ করেন।
৫. রায়গঞ্জ দুর্গাপুর রাজবাড়ি:
রায়গঞ্জ বাহিন রাজবাড়ির মতোই রায়গঞ্জের আর একটি উল্লেখযোগ্য ভ্রমণযোগ্য স্থান হলো রায়গঞ্জের দুর্গাপুর রাজবাড়ি। এই রাজবাড়ি ৪০০ বছরেরও বেশি পুরোনো তবে এই রাজবাড়ির পরিচর্যা আজও সুন্দর ভাবে হওয়ায় এই রাজবাড়ি তার সোন্দৌর্য হারায় নি। এই দুর্গাপুর রাজবাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকের অন্তর্গত। শোনা যায় জমিদার ঘনশ্যাম কুন্ডু এবং আরও তাদের পূর্ব পুরুষরা এই সাধারণ জমিদার বাড়িকে রাজবাড়িতে পরিণত করে। এই দুর্গাপুর রাজবাড়ির বৈশিষ্ট্য হলো এখানে বড়ো করে দেবীর আরাধনা করা হয় যা আজও সেই জমিদার বাড়ির বংশধরেরা চালু রেখেছেন।
বাঙালিদের সব চেয়ে বড়ো উৎসব দুর্গাপুজো আর এই দুর্গাপুজো অনেক বড়ো করে আজও পালন করা হয় এই রাজবাড়িতে। মহালয়ার দিন থেকে সবাই মেতে ওঠে দেবী আরাধনায় তার সাথে মহাঅষ্টমীর সন্ধ্যা আরতি থেকে শুরু করে দশমীর সিঁদুর খেলা ও দেবীর বিদায় পর্যন্ত সবাই উৎসবে মেতে থাকে। আর এই বিষয়টি আজও সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা সমেত আশেপাশের বহু জেলার মানুষদের কাছে বেশ একটা ঐতিহ্যবাহী বিষয়। আর রাজবাড়িটি এতটা বছর পুরোনো হওয়ার পরও নিজের শোভা এত সুন্দর ভাবে বিস্তার করছে যে অনেক ভ্রমণকারীদের পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে রায়গঞ্জে ইটাহার ব্লকে অবস্থিত এই দুর্গাপুর রাজবাড়ি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
বাহিন রাজবাড়ীর ও দুর্গাপুর রাজবাড়ির মতোই আরও বিভিন্ন ছোটো বড়ো ঐতিহাসিক রাজবাড়ি রয়েছে যা বহু বছর বছর পুরোনো যেখানে সেখানকার রাজা ও জমিদারদের অনেক রহস্য জমে রয়েছে সেই রাজবাড়িগুলির ঐতিহাসিক দেওয়ালগুলোতে। আরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মন্দির যা সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য অনেক শ্রদ্ধেয় ও পূজনীয়। রয়েছে স্পেশাল শিশুদের জন্য পড়াশোনার ব্যবস্থা, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্ণজোড়ায় অবস্থিত মিউজিয়াম। Tourist Places in Raiganj

বিগত প্রায় ৩ বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।