Raiganj: পড়ুয়াদের ব্যাগে থেকে পাওয়া গেল কন্ডোম, বিয়ার !
Raiganj
বিদ্যালয় বা পাঠশালা হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন, যা মূলত শিক্ষাদানের কেন্দ্র, যেখানে শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থী পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে জ্ঞানলাভ করে থাকে।
বিদ্যালয় সব সময়ই চারদেয়ালের ঘেরা হবে এমন নয়, বরং একজন শিক্ষক, কিছু পরিমাণ শিক্ষার্থী, চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চ, চক-ডাস্টার,বই-খাতা-কলম ইত্যাদি এবং শিক্ষাসহায়ক পরিবেশই বিদ্যালয় হবার জন্য যথেষ্ট।
প্রশাসনকে এই বিষয়ে কিন্তু সাহায্য করা। বাবা-মায়েদের জন্য বলছি ছেলেমেয়েদের কষ্ট করতেও শেখান। অনেক অর্থ হাতে দিলে তার মধ্যে কোনও সময়েই অর্থের মূল্য বোঝার ক্ষমতা তৈরি হবে না। প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করার অভ্যস এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করবার প্রবণতা তৈরি করবার অভ্যস 14 বছরের পর থেকেই শুরু হওয়া দরকার। অর্থনীতির এই প্রাথমিক পাঠ জীবনশৈলীর সঙ্গে যুক্ত করতে পারলে তরুণ মনে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। অনেক দায়িত্ববান নাগরিক তৈরি হবে তারা। কিন্তু সেসব চিন্তা করবার লক্ষণ দেখি না। ফলে উদ্দেশ্যহীন ভাবে বেড়ে উঠছে তরুণ সমাজের একাংশ।’ Raiganj
Table of Contents
হঠাৎ করে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল রায়গঞ্জের স্কুলে। ঠিকঠাকভাবে চলছিল স্কুলের পঠনপাঠন। কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চোখে বড্ড সন্দেহজনক লাগছিল সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের আচার-আচরণ। সন্দেহ হতেই পড়ুয়াদের ব্যাগ থেকে বের হল একগুচ্ছ কন্ডোমের প্যাকেট। এমন ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান শিক্ষকরা।পরে ডেকে পাঠানো হয় অভিভাবকদের। তাঁদের সামনে এই ঘটনা স্বীকার করে নেয় ওই পড়ুয়ারা। পড়ুয়ারা প্রধান শিক্ষককে জানায়, কন্ডোম নিয়ে কৌতূহল থাকায় একজন নিজেদের দোকান থেকে নিয়ে আসে ওই কন্ডোমের প্যাকেট। এবং অন্য পড়ুয়ারা তা টাকা দিয়ে কিনে নেয়। অবশ্যই স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। এদিকে শহরের আরেকটি স্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া ব্যাগ থেকে বিয়ারের বোতল পাওয়া যায়। স্কুলে এসে লুকিয়ে বিয়ার খাওয়ার অভিযোগ উঠতেই পড়ুয়াদের। কড়া ধমকের পাশাপাশি অভিভাবকদের ডেকে পাঠায় স্কুলের শিক্ষিকারা। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় স্কুল চত্বরে।
দু’দিন আগে আরেকটি স্কুলে এক পড়ুয়া মোজার ভেতর থেকে উদ্ধার হয়েছে 19 হাজার টাকা। পড়ুয়াটি কী কারণে এত টাকা নিয়ে এসেছিল, তার কারণ আজও জানতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরপর এহেন ঘটনায় একেবারে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে রায়গঞ্জের (Raiganj) শিক্ষামহল।এই ঘটনায় প্রাক্তন শিক্ষক থেকে শুরু করে বর্তমান শিক্ষা সচেতন বুদ্ধিজীবীরা এতে সামাজিক ভারসাম্য হারানোর ছবি দেখছেন।
রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ চন্দন রায়ের বলেছেন, ‘এই ঘটনার ব্যাখ্যায় আমি দুটি আঙ্গিকে করতে চাই। প্রথমত, স্কুল প্রাঙ্গণেই পড়ুয়াদের জীবনশৈলী নিয়ে শিক্ষা চালু হওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে,স্কুলের প্রাঙ্গণেই মাদকবিরোধী সচেতনতার জন্য আলোচনা সভার প্রয়োজন। প্রশাসনকে এই বিষয়ে কিন্তু সাহায্য করা। বাবা-মায়েদের জন্য বলছি ছেলেমেয়েদের কষ্ট করতেও শেখান। অনেক অর্থ হাতে দিলে তার মধ্যে কোনও সময়েই অর্থের মূল্য বোঝার ক্ষমতা তৈরি হবে না। প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করার অভ্যস এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করবার প্রবণতা তৈরি করবার অভ্যস 14 বছরের পর থেকেই শুরু হওয়া দরকার। অর্থনীতির এই প্রাথমিক পাঠ জীবনশৈলীর সঙ্গে যুক্ত করতে পারলে তরুণ মনে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। অনেক দায়িত্ববান নাগরিক তৈরি হবে তারা। কিন্তু সেসব চিন্তা করবার লক্ষণ দেখি না। ফলে উদ্দেশ্যহীন ভাবে বেড়ে উঠছে তরুণ সমাজের একাংশ।’ Raiganj
রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের সামাজিক অবক্ষয় হয়েছে, এটা স্বীকার করে নিতে হবে। তাই চটকদারি বেড়েছে। আজকাল অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে গিয়েছে, ফেরাতে হবে। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা আমাদের বন্ধু বলে মনেই করছে না। অথচ তাত্ত্বিক ভাবে আমরাই ওদের গাইড, ফিলোজফার, ফ্রেন্ড। কোভিডের পরে সমাজে বহু ক্ষতি হয়েছে। তাই অভিভাবকদের বলব, চূড়ান্ত ব্যস্ততার সময়েও সন্তানদের সাহচর্য দেন। শাসন নয়, ভুলভ্রান্তিকে ভালোবেসে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। কিশোর-কিশোরী বয়সকে মূল ট্র্যাকে ফেরানোর একমাত্র উপায় হল তাদেরকে সময় দিন।’ Raiganj
ইটাহার হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অমিত সরকারের বলেছেন, ‘শুধু শিক্ষাজগৎ নয়, এতে সমস্ত মানুষই উদ্বিগ্ন। কোনও মা-বাবাই চান না তাঁদের সন্তান ভুল পথে পরিচালিত হয়। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষা সমাজ অন্তিম শয্যায় শায়িত। সন্তানদের শিক্ষা, নীতিবোধ, আদর্শ, মূল্যবোধ ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরম্পরাগত সনাতন আদর্শ সঞ্চালন সম্বন্ধে তাঁরা সম্পূর্ণ উদাসীন। তারই বিষময় ফল তাঁরা ভোগ করছেন, সমাজও ভোগ করছে। এমনটা অনভিপ্রেত। সুশিক্ষাই এমন ঘটনাবলিকে থামাতে পারে।’
বিগত প্রায় এক বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।