Lakhir Bhandar Online Application 2024: ১৬ দফা নির্দেশিকা জারি করলো রাজ্য সরকার। টাকা পাওয়া হবে আরও কঠিন!
Lakhir Bhandar Online Application 2024:
ট্যাব-কাণ্ডের পর সব প্রকল্পের অনুদান প্রদান করা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিলেন রাজ্য সরকার। সরকারি সব প্রকল্পে অর্থ বণ্টনের জন্য ১৬ টি নতুন নিয়মের নির্দেশিকা জারি করেছেন সরকার। আসলে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ট্যাব-কাণ্ড নিয়ে অনেকটাই চিন্তায় ছিলেন সরকার। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েই পশ্চিমবঙ্গের অর্থ দপ্তর রাজ্যের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে অর্থপ্রদানের প্রক্রিয়ায় নতুন ও কড়া নিয়মাবলী জারি করেছেন।
লক্ষ্মীর ভান্ডার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রী প্রভৃতি প্রকল্পগুলির অর্থ সুষ্ঠু ও সঠিক ভাবে উপভোক্তাদের হাতে পৌঁছে দিতে নবান্ন ১৬ দফা নির্দেশিকা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশিকাগুলি বিশেষত ট্যাব বিতরণে পাওয়া অভিযোগ এবং সেই সংক্রান্ত অনিয়ম এড়ানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। Lakhir Bhandar Online Application 2024
Table of Contents
প্রকল্পগুলির গুরুত্ব ও লক্ষ্য:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পগুলি সমস্ত ভোটারদের আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।
আমরা সকলেই জানি, রাজ্য সরকার দ্বারা প্রদত্ত লক্ষ্মীর ভান্ডার, রূপশ্রী, এবং কন্যাশ্রী প্রকল্পগুলি মহিলাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে এসেছে। কিন্তু ট্যাব-কাণ্ডের মতো একটা বিশ্রী ঘটনা মানুষদের মনের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করেছে। তাই এই নির্দেশিকাগুলির লক্ষ্য শুধুমাত্র অনিয়ম দূর করা নয়, বরং সাধারণ মানুষের কাছে সরকার দ্বারা প্রদত্ত প্রকল্পগুলির প্রতি আস্থা বাড়িয়ে তোলা।
জানুন ১৬ দফা নির্দেশিকাগুলো কি কি?
১) ব্যাংকের শাখা রাজ্যের মধ্যে থাকতে হবে:
অনেক সময় দেখা যায় উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের শাখা রাজ্য তথা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকে। এখন থেকে এই নিয়ম আর থাকবে না। যিনি উপভোক্তা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের শাখা অবশ্যই থাকতে হবে পশ্চিমবঙ্গের ভেতরে। এর ফলে টাকা পাঠানোর সময় কোন বিভ্রান্তি ঘটবে না।
২) অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া:
রাজ্য সরকারের জারি করা নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, অর্থ দপ্তর থেকে বলা হয়েছে অফলাইনে আবেদন করা যাবে না, কারণ অফলাইন আবেদন করার পর সেই নথিপত্র দেখে অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি করার সময় অনেক ভুল চোখে পড়ে।
এই সমস্ত অতিরিক্ত ঝামেলা এড়ানোর জন্য এবার থেকে সবাইকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ফিজিক্যাল ডকুমেন্টেশনের সমস্যা দূর হবে, পরিছন্নতা বজায় থাকবে।
৩) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যাচাই:
যখন কোনো উপভোক্তা সরকারি সাহায্য পান তখন তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি NPCI বা ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার দ্বারা যাচাই করা হয়।
এই যাচাই প্রক্রিয়া আরো কঠোরভাবে করতে হবে যাতে উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সঠিক রয়েছে কিনা সেটা বোঝা যায়। Lakhir Bhandar Online Application 2024
৪) সেভিংস অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন:
যদি কোনো ব্যক্তি যে কোনো সরকারি প্রকল্পের জন্য আবেদন করে থাকেন তো সেক্ষেত্রে তার নিজস্ব নামে একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকাটা জরুরি।
১৬ দফা নির্দেশিকায় স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে, প্রতিটি আবেদনকারীর নিজের নামে একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা বাধ্যতামূলক।
৫) নাম ও ঠিকানা সংশোধন:
উপভোক্তার নাম এবং ঠিকানা সম্পর্কিত নানান সমস্যা দেখা যায় যেমন- বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয় বানান ভুল। এই কারণে অনলাইনে আবেদনের সময় নাম ও ঠিকানা এবং ব্যাংকের সমস্ত তথ্য দুটো আলাদা সময়ে এন্ট্রি করতে হবে।
ব্যাংকের সমস্ত তথ্য এবং ঠিকানায় কোনো রকমের ভুল থাকলে তা সঠিক করা যাবে ফলে টাকা পাঠানোর সময় অ্যাকাউন্টে পৌঁছাতে আর দেরি হবে না।
৬) ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে নামের মিল থাকতে হবে:
অনেক সময় দেখা যায় উপভোক্তার নামের সাথে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নামের সঠিক মিল নেই , যেমন হতে পারে পদবী আলাদা, বা বানান অন্যরকম। Lakhir Bhandar Online Application 2024
এধরনের ঘটনাগুলি থেকে সতর্ক থাকার জন্য আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টের সাথে তার নাম সঠিকভাবে মিলিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংকে গিয়ে সেটি সঠিক করে নিতে হবে।
৭) এলার্ট সিস্টেম চালু:
এই প্রথম সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে SMS এলার্ট সিস্টেম চালু করা হবে। অনলাইনে কোন প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক কিভাবে করা যায় সেই ঝামেলা কমিয়ে আনতে এবং প্রকল্পের মাঝে আরও স্বচ্ছতা বাড়াতে এবার থেকে আবেদনকারীর আবেদনের অবস্থান কি অবস্থায় রয়েছে তা জানাতে SMS পাঠাবে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে টাকা বরাদ্দ হয়েছে কিনা, কি সমস্যা রয়েছে, টাকা কবে অ্যাকাউন্টে ঢুকবে এই সমস্ত বিষয়ে অ্যালার্ট করা যাবে উপভোক্তাকে।
৮) IFIC যাচাই প্রক্রিয়া:
সেভিংস অ্যাকাউন্টের IFIC কোডটি রিজার্ভ ব্যাংকের তালিকা অনুযায়ী মিলিয়ে দেখতে হবে। এর ফলে অ্যাকাউন্ট সঠিক কিনা সেটা ভালো মতো খতিয়ে দেখা যাবে। Lakhir Bhandar Online Application 2024
৯) প্রতিলিপি বা ক্যান্সেল চেক নিতে হবে:
উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর আগে তার সেভিংস অ্যাকাউন্টের পাস বইয়ের প্রথম পাতার জেরক্স বা ক্যান্সেল চেক জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে উপভোক্তার নাম, অ্যাকাউন্ট নাম্বার দুবার করে যাচাই করতে হবে।
১০) পোর্টাল একই থাকতে হবে:
রাজ্য সরকার দ্বারা জারি করা আর একটি নিয়ম হলো, টাকা পাঠানোর সময় টাকা পাঠানোর পোর্টাল এবং বিভাগীয় পোর্টালের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।
১১) একটি ব্যাংক একাধিক উপভোক্তা:
এই ১৬ দফা নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যেনো একজন ব্যক্তিই ব্যবহার করে, অর্থাৎ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে একাধিক মানুষের প্রকল্পের টাকা তোলা যাবে না।
১২) প্রকল্পের বিষয়ে সতর্ক:
একই সঙ্গে অর্থ দপ্তরকে সতর্ক হতে হবে যে কোন ব্যক্তি কোন প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন। ফলে কোনো প্রকল্পের টাকা অন্য ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়ার ঘটনা ঘটবে না। Lakhir Bhandar Online Application 2024
১৩) অফিসারদের অনুমোদন দিতে হবে:
প্রকল্পের টাকা ছাড়ার পর ব্যাংকের গ্রুপ A পদের অফিসারদেরকে অনুমোদন দিতে হবে। অর্থাৎ অফিসার ছাড়া অন্য পদে কোনো আধিকারিক টাকার বিষয়ে অনুমোদন দিতে পারবেন না।
১৪) ত্রিমাসিক স্টেটমেন্ট:
যে প্রকল্পের জন্য যে দপ্তর টাকা পাঠায় তাদেরকে মাসিক অথবা তিন মাস অন্তর অন্তর একবার পর্যালোচনার জন্য স্টেটমেন্ট পাঠাতে হবে অর্থ দপ্তরের কাছে।
১৫) অটো ক্যানসেল প্রক্রিয়া:
অনেক সময় এমন হয় টাকা পাঠাতে গেলে টাকা আটকে যায়, পরে সেটি অটোমেটিক ক্যানসেল হয়ে যায়। এরকম ঘটনা ঘটলে নতুন করে আবার টাকা পাঠাতে হবে উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে। Lakhir Bhandar Online Application 2024
১৬) অফলাইন আবেদনের সর্তকতা:
যে প্রকল্পগুলিতে অফলাইন আবেদন করা হবে সেগুলিতে এমনভাবে নথিপত্র উপস্থাপন করতে হবে যে উপভোক্তার সেই তথ্যগুলো যাচাই করতে আধিকারিকদের কোনো রকম সমস্যা না হয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী বলা হয়েছে, যদি কোনো রকম সমস্যা হয় সেই যাচাই প্রক্রিয়া সেখানেই আটকে দেওয়া হবে।
এই নিয়মগুলি তৈরি করার পিছনে রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ছিলো, যাতে যে কোনো সরকারি প্রকল্পের টাকা পাঠানোর বিষয়ে আর কোনো দুর্নীতি না ঘটে। ভবিষ্যতে ‘তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের’ মত দুর্নীতি যাতে আর না ঘটতে পারে সেদিকে কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে নবান্ন থেকে। Lakhir Bhandar Online Application 2024
আরও পড়ুনঃ Lakshmi Bhandar Latest News 2024: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের নাম বাতিল শুরু! দেখুন তার কারণ ও সমাধান!
বিগত প্রায় দুই বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।