WB crop insurance : দানা ঝরে ফসলের বিপুল ক্ষতি। ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার।মমতার কড়া নির্দেশ।
WB crop insurance :
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় দানা ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়েছে। এতে করে বিপুল সম্পদের ক্ষয় ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের ফসলেরও হয়েছে চরম ক্ষতি। হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দানা ঝড়ের প্রসঙ্গে ২৫ শে অক্টোবর একটি প্রশাসনিক সভার আয়োজন করেছিলেন। যেসব জেলায় দানা ঝড় আছড়ে পড়েছে সেসব জেলার আধিকারিকদের নিয়ে হয় এই সভা। WB crop insurance
সেই সভাতেই কৃষকদের ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং এই নিয়েই চলে বিস্তর আলোচনা। কী সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী? আজকের এই প্রতিবেদনে বিশদে আলোচনা করা হল।
Table of Contents
বাংলা শস্য বিমা প্রকল্প:
পূর্ব বর্ধমান ,পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদনীপুর ,পশ্চিম মেদনীপুর, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া আরো অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্থ জেলার শস্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে এইসব জেলার কৃষকদের বাংলা শস্য বীমা র আওতায় আনা হবে।
যদিও পূর্বেই জেলা কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ইতিমধ্যেই শস্য বীমায় আবেদন করার তারিখ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে কারণ বাংলার সব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক যাতে এই বীমার আওতায় আসতে পারে। WB crop insurance
শস্যবীমা র শর্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্লক:
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কোনো ব্লকের 60% শস্যের ক্ষতি হলে তবেই সেই ব্লক শস্য বীমা র সুবিধার আওতায় আসবে।
কিন্তু চলতি বছর অতিবৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র কারণে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকের ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে ঘাটাল, দাসপুর এক ও দুই, চন্দ্রকোনা এক ও দুই, কেশপুর, এবং ডেবরা ব্লকে ধান চাষের ওপর বন্যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লকে প্রায় ৩১ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে আমন ধান চাষের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার ৭৮৪ হেক্টর জমিতে। এক লক্ষ ২২ হাজার ২০০টি কৃষক পরিবার এই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
আবেদন পত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া:
২৩ শে অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ্য আবেদন পত্র জমা পড়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ আশীষ বাবু জানিয়েছেন, ““আমরা চাই, জেলায় সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষি বাংলা শস্যবিমার আওতায় আসুন।
বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে কৃষি ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিশেষ করে ধান চাষ। তাই আমরা চাইছি সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা বিমার সুবিধা পান।“আমরা চাই, জেলায় সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষি বাংলা শস্যবিমার আওতায় আসুন।
বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে কৃষি ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিশেষ করে ধান চাষ। তাই আমরা চাইছি সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা বিমার সুবিধা পান।” WB crop insurance
আশীষ বাবু আরও বলেছেন যে মূলত আবেদনপত্র জমা নেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ শে সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়েছিল কিন্তু জেলা প্রশাসনিক ও তৃনমূল কংগ্রেস এর পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করা হয়েছে এই তারিখটি যাতে ৩০ অক্টোবর অবধি বাড়ানো হয়।মুখ্যমন্ত্রী সেই অনুরোধ মেনে নিয়েছেন।
আরও বর্ধিত সময়সীমা:
সম্প্রতি দানা ঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলা সহ আরো অনেক জেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই সকল কৃষক যাতে শস্য বীমা করাতে পারেন সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী কৃষি দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন এই বীমায় আবেদন জমা নেওয়ার তারিখ যেন আরো বাড়ানো হয়।
২৫ শে অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভা থেকে জানান যে শস্য বীমায় আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ আরো একমাস বর্ধিত করা হলো। অর্থাৎ বাংলার কৃষকেরা ৩০ শে নভেম্বর পর্যন্ত তাদের ফসলের বীমা করার সময় ও সুযোগ পাবেন। আগে এই আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ শে অক্টোবর। WB crop insurance
চাষিদের বিনামূল্যে বীজ বিতরণ:
বাংলা শস্য বীমার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সবজি ও আলু বীজ প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এছাড়া সার ও আলু বীজ নিয়ে হওয়া কালোবাজারি রোধের উদ্যোগ ও নেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই চন্দ্রকোনা ব্লকে কৃষকদের সঙ্গে সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখান থেকে পঞ্চায়েত প্রধান, সরকারি আধিকারিক ও কৃষি বীজ বিক্রেতাদের নিয়ে কৃষি সামগ্রী সম্পর্কিত কালোবাজারি রোধের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনের নেওয়া এই উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক দের বিশেষভাবে সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হবে টাকা:
মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষি দপ্তর কে করা নির্দেশ দিয়েছেন যে দানা ঝড়ের তান্ডব চালানোর ৪৮ ঘণ্টা পর ক্ষতি হওয়া সকল কৃষকদের জমিতে জমিতে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ জরিপ করতে এবং প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করতে।
মূখ্যমন্ত্রী চান যেন কোনো কৃষক ক্ষতিপূরণ থেকে বাদ না যান। সকলেই যাতে তাদের ক্ষতির পরিমাণ বাবদ একটা নূন্যতম ক্ষতিপূরণ পেয়ে যান। সকল কৃষক যাতে শস্য বীমা করিয়ে নেয় তার জন্য আবেদনের তারিখ বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর করা হয়েছে।
বিগত প্রায় এক বছর ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজের সঙ্গে যুক্ত। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারি ও বেসরকারি চাকরির প্রতিবেদন লিখতে পারদর্শী।